প্রদীপ চক্রবর্তী

ধর্ষণ যেখানে উদ্দীপক শর্ত !  

প্রদীপ চক্রবর্তী



এক .


বিন্যস্ত ফুল ক্রীত - তরঙ্গ ধরে ফুটলো না কোনো গাছে 

শব্দের ফুল সরানোর কথা কেউ ভাবছে না 

কেন ? 

কালেভদ্রে রতিপুষ্প ঝ'রে পড়ে অথবা ফাৎনা ছিঁড়ে বাঘছাল বেঁধে নিয়ে শস্যক্ষেত্রে যায় পথিক ও শ্রমণ ...

অবমানুষের বোঝা কমাতে কমাতে ফুল ফোটার আর শব্দ হলো না 


দুই .


এক ফোঁটা রঙভঙ্গী রক্ত পড়ে আছে ...

কার রক্ত ? গ্রীষ্মহারানো কুয়োর ভেতর ! 


মেয়েটা ঝুলছে অনপেক্ষ ভাবে ...

 রাবণের চিতার মতো জোরে চিৎকার করেন ব্রহ্ম ,

যতক্ষণ না জল পড়ে  ফোঁপানো কান্নার মতো ...


যতক্ষণ না ন্যাংটো মেয়েটা একা একা মেঘের ওপারে চলে গিয়ে নীল ফানুসের মতো আকাশের আলো তৈরী করে ...


তিন .


শ্রেয়তর প্রাতরাশ   

নিহিত রক্তে তবু প্রভুত্ব , অশ্বারোহী 


ওই তো ঘোড়াদের ছবিগুলো 

 ফুসফুসে ঢুকে আসছে বেরিয়ে যাচ্ছে , বসত নাড়িয়ে দিচ্ছে ,

খিস্তি খেউড়  শূন্যের ভেতর ক্রম জায়মান !


তবু তুমি চুপ !  সোস্যাল মিডিয়ায় কথার ফুলকি উড়িয়ে তোমার কাজ সারা | তোমার ভেতরে  দাহনবেলা , পুড়েও তুমি পোড়ো না 


ধর্ষিতা মেয়েটির রক্তে ভেজা ঠোঁট তোমাকে ঝকঝকে একটা ছোরার মতো ছুঁড়ে দিয়েছে  


ধ্বংসকেও শিল্প ভেবে তুমি নিষিদ্ধ আমোদে 

আছড়ে পড়ো তোমার গোপন তৃষ্ণায় 


তুমি  সামলাও পলকা ঘর সংসার 

স্ত্রী পুত্রের 

ব্যক্তিকেন্দ্রিক নিরাপত্তা 

একটু বুঝি বিষাদ -  মধুর -  একা লাগে ?


তোমার নিজের নিজেকে একা লাগে ?


যেহেতু অন্যদের চেয়ে নিজেকে দামি ভেবেছো  !


শ্রেয়তর উচ্চারণে বিশুদ্ধ নিয়মের চিরাচরিত দিনলিপি 


ধর্ষণ থেকে ধর্ষিতার 

ক্রমশ জড়িয়ে পড়া নির্দায় শোক 


চার .


রোমাঞ্চ মদে মাতালের মতো হে ভ্রামক ,

হে তস্কর , নিশাচর কীটপতঙ্গেরাও আয়না থেকে দূরে , জল থেকে দূরে , আগুন থেকে রোদ্দুর জ্যোৎস্না থেকে সরে যাচ্ছে তোমার সাজানো খেলাঘর থেকে সজ্ঞান মূঢ়তায়  বিকল্প স্থবির জীবনে 


হা হা নষ্ট , ভবিতব্যের  অন্তর্যামী মনে হলো হৃদয়কে ...


হা হা নষ্ট গলে পচে ওঠা মন , 

ফুটপাথের নোংরা মেখে তোমার স্তব্ধতা ছুঁয়ে তোমার ছায়া একটু গল্প করে , হেরে যাওয়া ছায়ার সাথে ,


কিছু জৈবিক ছায়া আর পথে পথে ঘোরে একরোখা দৌড়ের ঘোড়া ...




পাঁচ .



একাগ্র গহ্বর  |

 অগোছালো একাগ্রতাহীন  বাঘের মতো আগুন জ্বলবে | 

একটা পুরোনো উৎসর্গ | 

হননের তরঙ্গ -  উর্মি | 

অবাক জিভে জড়ানো শব্দের রসিক ফেরি 


শব্দজীবী তোমার আত্মঘাতী কুশলী থাবায় বিমূর্ত দেহাতি কয়েকজন রঙ | প্ল্যাটফর্মের  এককোণে আগুন | তুমি অপসৃয়মাণ বাঘের গলার স্বরে ভেসে আসছো |


শরৎ পরিধিব্যাপী  জগতের '  হালুম ! ' 


মিয়োনো বুকে ঘাম ঘৃণা ভয় , মুখোশের কারুকাজ


সংসার -  পৃথিবী ফুলকির মতো বুক ঘষ্টে রক্তাপ্লুত 

অস্থির সময়ের আততায়ী  | 

ক্রম দীপিকার আলোয় তোমার একলা বাঘের খালি গলা পৌঁছে দিতে চাও | 

কিভাবে উদ্ভব আর বিকাশ হয় একজন ভিনদেশি কুর্সি যাদুকরের | 

বালিকা নামক প্রসব -  দরোজা দ্যাখো | দুটি হাত মুঠ করে রয়েছে শহরতলীর শালিমার | দেওদার শাল ও বেশ্যাপাড়া  , আর অন্ধ ভ্রুণ মায়ের ফ্লুইডে পিছু সরে সরে ...


তুমি মেয়ের মাংসে আর অন্য দেখলে না | 

দূর নিয়ন্ত্রক বিজ্ঞাপনের জ্যোৎস্না পড়ে সৈকতের ত্বকে ...


পুনরাবর্তিত ডানার শব্দে মা তুমি অবোধ বালিকা ...


পাঠকের মতামতঃ